পাখিদের মাছ খাওয়ার নিমন্ত্রণ জানালেন দুপচাঁচিয়া উপজেলার নির্বাহী অফিসার জনাব মো: সুমন জিহাদী
দেশব্যাপী যখন ফাঁদ পেতে পাখি শিকারের ঘটনা ঘটছে, যখন পুকুর ও খালের ওপর সাইন বোর্ড দেখা যায় যে ‘এখানে মাছ ধরা নিষেধ’ সেখানে এক ভিন্ন ধরণের সাইনবোর্ড চোখে পড়ছে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার মানুষদের।
সেই সাইনবোর্ডে লেখা ‘পাখিদের মাছ খাওয়ার নিমন্ত্রণ।’ এর সাথে রয়েছে চার লাইনের একটি কবিতাও। উপজেলা পরিষদের পুকুর পাড়ে ছন্দময় লাইনগুলো এরকম, ‘উড়তে উড়তে হাঁপিয়ে গেছো ওহে পাখির ঝাক, একটু থামো মাছ খেয়ে যাও মাছরাঙ্গা বা কাক।’’
এই চমৎকার আমন্ত্রণটি জানিয়েছেন দুপচাঁচিয়া উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব মো: সুমন জিহাদী। তিনি প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণে বিভিন্ন রকম কাজ হাতে নিচ্ছেন বলে জানা যায়।
পাখিদের মাছ খাওয়ার নিমন্ত্রণ জানানোর পেছনের গল্পটি তার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘ইদানিংকালে দেখি অনেকে ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করেন, পুকুরের ওপর জাল দিয়ে রাখেন যেন পাখিরা মাছ ধরে নিয়ে যেতে না পারে। কিন্তু এই বাস্তুসংস্থান টিকিয়ে রাখার জন্য সব প্রাণিরই প্রয়োজন রয়েছে। রয়েছে তাদের খাদ্য ও বাস্তুর সংস্থান করা। আমি শুধু জনগণকে সচেতন করতেই এই কাজটি করেছি। আমিও জানি যে পাখিরা তো আর লেখাপড়া জানে না। তবে মানুষতো সৃষ্টির সেরা জীব। তারা হয়তো এটি পড়ে সচেতন হবে, পাখির প্রজনন স্থল, বাস্তু ও খাদ্যস্থান গুলো নষ্ট করবে না। হয়তো শিকার করা বন্ধ করবে।’’
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের এই উদ্যোগ ইতিমধ্যে আলোচনার সৃষ্টি করেছে এবং প্রশংসিত হয়েছে। এলাকাবাসীর সাথে আলাপ করে জানা যায়, গত দুই মাস আগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার একটি যৌথ অভিযানের মাধ্যমে এক অসাধু পাখি ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেন ও ভ্রাম্যমান আদালতে ছয় মাসের কারাদন্ড প্রদান করেন। এ সময় তিনি প্রায় ৩৪০ টি পাখি অবমুক্ত করতে পারেন। সে কাজে পুলিশ বিভাগ, বন বিভাগ সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিল। দুপচাচিয়া উপজেলার ইরামতি খালটি পরিষ্কার করার দাবীও রযেছে এলাকাবাসীর। সেটি পরিষ্কার করে মৎস অধিদপ্তরের সহযোগিতায় মাছ চাষ করে গ্রামবাসীকে সম্পৃক্ত করারও পরিকল্পনা রয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের। এই উপজেলায় উপজেলা চেয়ারম্যান, সহকারী কমিশনার (ভূমি), অফিসার ইন চার্য, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ সকলে মিলে এক চমৎকার সমন্বয় রয়েছে যার কারনেই এসব কাজ করা সম্ভব হয় বলে জানালেন তিনি।